Saturday, July 21, 2012

“ফুটপাথ তুমি কার?”


নিজেকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম একদিন
ফুটপাথ, তুমি কার?
কত মানুষ রোজ হাঁটে,
সকাল বিকাল,
তাঁরা ভাবে তার
কত মানুষ হকারি করে,
তাঁরা ভাবে তার!
কত দালাল আসে তাদের পাওনা নিতে
তাঁরা ভাবে তার
সারা দিনের ক্লান্তির পরে
রাতে কত মানুষ ঘুমায়
তাঁরা ভাবে তার
কত মানুষ ঘর বাধে
এই ফুটপাথে
তাঁরা ভাবে তার
কত অবাঞ্ছিত শিশুর জন্ম হয়
এই ফুটপাথে
তাঁরা ভাবে তার
রোজ রাতে কিছু নরখাদক আসে
হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়
কোনও যুবতি মেয়েকে
সে হয়ত বা কারও মা
কারও বা বোন
আবার হতেও পারে কারও প্রেয়সী
সেই নরখাদক ভাবে
ফুটপাথ তার নিজের
সবাই ভাবে ফুটপাথ তার নিজের সম্পত্তি
এইসব দেখে আড়ালে কেউ হাসে
মনের প্রশ্ন মনেই থেকে গেলো
উত্তর পেলাম না
ফুটপাথ তুমি কার?

হারিয়ে যাচ্ছে


আকাশে ঘন কালো মেঘ;
যে কোনও সময় বৃষ্টি আসবে,
ভাসিয়ে দেবে সব।
দুরের আকাশে
কিছু সাদা বক
সারিবদ্ধ ভাবে উড়ে যাচ্ছে
মনে হচ্ছে
সাদা জুঁই মালা
আকাশের বুকে
কেউ মেলে দিয়েছে।
অপু, আকাশের দিকে
অপলক দৃশটিতে তাকিয়ে আছে।
এমন দিনেই তো নদীর পারে,
নন্দিনীর দুই হাত ধরে
মনে মনে বলেছিল
ভালবাসি তোমায় আমি
নন্দিনী কিছু বলেনি মুখে,
শুধু দু চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে
গাল বেয়ে পরেছিল।।
দুজনেই চুপ,
ঠিক তখন ঝম ঝম বৃষ্টি
শুরু হল।
আজ দুজনে ভিজবে,
তাই ছাতা আনেনি।  
যেই বিদ্যুৎ চমকাল,
নন্দিনী অপুকে জাপটে ধরল।
দুজনের চোখ বন্ধ
ঠোঁট একদম কাছাকাছি...
আর মনে নেই,
কেমন হারিয়ে যাচ্ছে।
দুরের আকাশে
কিছু সাদা বক
সারিবদ্ধ ভাবে উড়ে যাচ্ছে।

Tuesday, July 10, 2012

যোগ্য ছেলে


আজ সকালে অফিস আসার সময়
তাকিয়ে দেখি
জটোলা হয়েছে রেল লাইনের ধারে
এগিয়ে দেখি
এক বৃদ্ধা নারী
পরনে ছেড়া সাদা শাড়ী
চোখের জলে ভিজেছে সেই শাড়ী
শুনলাম তার যোগ্য ছেলে
ওখানে বসিয়ে রেখে গেছে চলে
হায় কপাল, শুনি কি কারন?
কারন শুনে মানে না যে মন
জন্ম দিল,
বুকের দুধ দিল যে মা
তার কিনা ভাত কাপড় জোটে না?
এই কি সুযোগ্য পুত্রের নমুনা?
মাকে সে নাকি বলে
বসিয়ে দিলাম রেল লাইনের ধারে
নিয়ে যাবে তোমার মেয়ে, তার ঘরে
যদি নিয়ে না যায়
গলা দিয়ে দিও রেল লাইনের পরে
এই কি সেই ছেলে?
যে কিনা মাকে না দেখলে
উঠত কেদে জোরে জোরে
মা তখন বুকের দুধ দিয়ে
করত শান্ত,
সেই ছেলে
আজ মাকে বলে
গলা দিয়ে দাও রেল লাইনের তলে?
বেচারি মা, তাও থানায় জানায় না,
বলে, থানায় জানালে,
শাস্তি পাবে যে আমার ছেলে
এখনো আমার ছেলে,
যে কিনা মাকে বলে,
গলা দিয়ে দাও রেল লাইনের তলে

দেখা হয়েছিল তোমার সাথে


আমি তখন ছাব্বিশ
তুমি হয়ত তেইশ
অফিস থেকে ফেরার পথে
দেখা হয়েছিল তোমার সাথে
সাদা চুরিদার পরনে ছিল তোমার
সবার মাঝে চোখে পরে আমার
কোনও কথা হয়নি
শুধুই চোখাচোখি
এইভাবে কাটল বেশ কিছুদিন
অনেকের মাঝে খুঁজতাম তোমায়
একদিন,
কেউ ছিল না বাস স্ট্যান্ডে
শুধু তুমি আর আমি
কেউ আসেনি?
জানতে চাইলাম আমি
তুমি বললে
এই তো আছি আমি
এটাই তো চেয়েছিলাম
স্বগতক্তি করলাম
তোমার আশায়
আমার হৃদয় আছে ছুঁয়ে
এমনি করেই চলছিল
হঠাৎ এক দমকা হাওয়া
সব ওলটপালট করে দিল
হারিয়ে গেলে তুমি
কোথায় আছো?
কেমন আছো?
জানা নেই আজ
হয়ত কোনও এক ভুলে
তুমি হারিয়ে গেলে
আজও অফিস থেকে ফেরার সময়
ভাবি
যদি দেখা হয় তোমার সাথে
কিছু সময় কাটাব দুজনে
হয়ত বা একান্ত গোপনে
ঠিক আগের মত
বৃথা চেষ্টা করে বাড়ি ফিরি
আবার পরদিন থাকি অপেক্ষায়
যদি তোমার সাথে দেখা হয়ে যায়