Thursday, June 21, 2012

রথের মেলায় আবার


মেঘলা আকাশ
ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা বাতাস
টিপ টিপ বৃষ্টি
লাগছে মিষ্টি

গরম জিলিপি হাতে
পাপড় ভাজা সাথে
বিকেলে রথের মেলায় যাওয়া
তোমায় কাছে পাওয়া

দুই বিনুনি মাথায়
লাল ফিতে বেধে
মিষ্টি লাগছে তোমায়
কাচের চুরি হাতে

এমনি কোরে মেলায়
হারিয়ে ফেলি তোমায়
খুঁজে পাইনা কোথাও
সব আনন্দ উধাও

বছর ঘুরে আবার
রথের মেলা এলো
এমনি করে ভীরের মাঝে
তোমার সাথে দেখা হোল

Wednesday, June 20, 2012

জুলাই মাসের একটা রাত


জুলাই মাসের একটা রাত, সময় ৯টা ৯।৩০টা হবে, মনে নেই এখন। অফিস থেকে ফিরছি। সারাদিন মুসল ধারায় বৃষ্টি হয়েছে, চারধার জলে থই থই। ট্রেন থেকে নেমে ষ্টেশনে দাড়িয়ে আছি, একটাও রিক্সাও নেই। প্যান্ট গুটিয়ে, হাঁটুর উপর করে, ছাতা মাথায় দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। সব দোকান বন্ধ, রাস্তা ফাঁকা, একটাও লোক নেই, শুধু আমি আর দু একটা কুকুর। মনে একটা কেমন ভয় লাগতে শুরু করল। হটাৎ মনে হল, কেউ আমার পিছনে আসছে। পিছনে ঘুরে তাকালাম, দেখি আমার বয়সের একটা মেয়ে, বৃষ্টিতে সব ভেজা, আমাকে ডাকছে। দাড়িয়ে গেলাম। বুঝলাম, ও একা, ছাতা নেই সাথে। আমি ছাতার নীচে নিয়ে নিলাম।
দুজনের মুখে কথা নেই, এইভাবে হাঁটছি, কিছুদুর যাবার পর, ও আমার নাম ধরে ডাকল, কেমন আছো, অসিমদা? আমি অবাক হয়ে গেলাম।
তাকিয়ে দেখি, আমার পাড়ার মিমি।
আমি ভাল আছি, কিন্তু এত রাতে কোথা থেকে ফিরছিস?
ও কেমন লজ্জা পেল মনে হল। আবার জানতে চাইলাম।
আমি গেছিলাম, পয়সা রোজগার করতে
ঠিক মানে বুঝলাম না
ঘরে ছোট বাচ্চা, বর কবেই অন্য মহিলাকে নিয়ে চলে গেছে। কি করব? পেট কি কথা শুনবে? মায়ের কাছে মেয়েকে রেখে বেরিয়েছিলাম
ওর কথা শুনে আকাশ থেকে পরলাম, হাত পা কেমন ঠাণ্ডা হয়ে গেল। মনে পরল, খুব ছোটবেলায়, এক সাথে আমরা খেলতাম। কত স্বপ্ন ছিল দুজনের দুচোখে। তারপর সব হারিয়ে গেল। আজ আবার কত বছর পরে দেখলাম ওকে। মনে পড়ল, সেই প্রথম চুমু খাবার কথা, আরো কত না ভোলা কথা।
মিমি হঠাৎ বলল যাবে আমার বাড়ীতে?
না বলতে পারলাম না। গেলাম, গিয়ে দেখি ওর মা, বয়সের ভারে নূয়ে গেছে, বাচ্চা মেয়েটা পড়ছে, জানে না, মা কিভাবে পয়সা আনছে। কেমন একটা লাগল, মা জানে না, মেয়ে কি ভাবে পয়সা আনছে, জানার দরকার নেই ওনার। সময় কেমন নিজের খেয়ালে চলে। এই বাড়ীতেই একদিন সব ছিল। আজ সব হারিয়ে গেছে। আজ এই বাড়ির মেয়ে নিজের সব বিক্রি করে দিয়েছে, শরীর দিয়ে পয়সা আনছে। সংসার চলছে, তিনটে প্রাণী  খেয়ে বেচে আছে।
[লেখাটা আমার নিজের কল্পনা। হটাৎ মনে হল, লিখে ফেললাম। কারো সাথে মিলে গেলে মাফ করে দিও। নাম যদি মিলে যায়, সেটাও মাফ করে দিও] 

গন্ধ মাখা খামে, চিঠি


কাল বিকেলের ডাকে
তোমার চিঠ পেলাম
সেই চেনা,
গন্ধ মাখা খামে
শেষে ইতি,
খামের পিছনে
নাম নেই
এটাই
প্রেরকের ছোট পরিচয়

আশা করিনি
লিখবে তুমি
শেষ কবে তোমার
চিঠি পেয়েছিলাম
মনে নেই আজ
কাঠের বাক্সে
রাখা আছে তোমার শেষ চিঠি
অনেক কিছু লিখতে তুমি

হঠাৎ
এক দমকা হাওয়াতে সব
ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল।
অনেক চিঠি লিখেছি
কোন উত্তর পাইনি
সেই গন্ধ মাখা খামে
তোমার চিঠি, পেছনে
ইতি...

হঠাৎ কাল বিকেলের ডাকে
তোমার পাঠানো চিঠি
গন্ধ মাখা খামে,
শেষে ইতি
নাম নেই তাতে
বুঝে নিলাম
এটাই তোমার নিরব পরিচয়।

কত বছর পথ চেয়ে বসে ছিলাম
তোমার চিঠির আশায়।

কাঠের বাক্সে
তোমার পাঠানো সব চিঠি
আগের মতই আছে
রেখেছি যত্ন করে
চিঠির পিছনে
ইতি...
আজও মলিন
শুধু গন্ধ নেই তাতে
তোমার ভালবাসার
সেই গন্ধ হারিয়ে গেছে। 

Friday, June 15, 2012

একটুখানি ছুঁয়ে থাকার কথা


একটুখানি ছুঁয়ে থাকার অলীক ইচ্ছে
হ্যাঁ, ছোঁয়া
একা, খুব একা,  
চারপাশ থেকে মুক্তি পেতে,  
একান্ত কোনও ছোঁয়া
সে ছোঁয়া হাওয়ায় মিলিয়ে যায় সব মনখারাপ
শরীর ছেরে সেই ছোঁয়া,
মনের মাটিকেও যেন ভিজিয়ে দেয় ধারাজলে

পার্কের রেলিং সেদিন কেমন যেন পালটে গেল
বৃষ্টির ছাঁট থেকে মুক্তি পেতে রেলিং ঘেঁষে,
গাদাগাদি-ঠেলাঠেলি
তারই মধ্যে ভিড়ের ঠেলায় খুব কাছাকাছি ঘেঁষে আসায়
কেঁপে উঠেছিল মন
আসলে কে যেন শত জনমের আবেশে ভরে দিল, ছুঁয়ে দিল

আঙুলে আঙুলে বয়েছিল,
চোরা বিদ্যুত স্রোত
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব,
চাই গোপন আশ্রয়
ছোঁয়ায় এত জাদু আছে?
জানা ছিল না,
তোমায় ছুঁতে চাওয়ার মুহূর্তরা-
কী জানি কী আবেশে দিশাহারা

যেখানে ভালবাসা লুকিয়ে থাকে
ঘরের চার দেওয়ালে,
সেখানে জাদু-ছোঁয়া ঘেঁষতে পারবে

Saturday, June 9, 2012

ভালবাসা কি?


অনুভব থেকে ভাবি আমি,
পারিনা দিতে ভাবের বিশ্লেষণ।
সব উত্তর জানা নেই
কি চাইছি,
কি দেবে আমায় শান্তি।
ভালবাসা কি,
জানি না আমি।
হতে পারে যন্ত্রনা,
হতে পারে মুগ্ধতা,
হতে পারে কাউকে কাছে পাওয়া।
মনের কোনে বসন্ত এসেছিল কবে,
আবার চলে গেলই বা কবে
বুঝতে পারিনি
কে দেবে আমায় শান্তি
জানা নেই আমার
কাকে ঘিরে সুখ
কাকে ঘিরে দুখ
কার পথ চেয়ে উন্মুখ
কে জানে?
ভালবাসি
কাকে? কে দেবে উত্তর?
জানি না আমি
ভালবাসি এই কথাটা জানি
কিন্তু কাকে
জানি না আমি

Tuesday, June 5, 2012

ইচ্ছে ছিল


ইচ্ছে ছিল
যাব তোমার কাছে
কোন এক সকালে
তুমি বলেছিলে
থাকবে তুমি
কদম গাছের নিচে
সকাল গড়িয়ে দুপুর
দুপুর গড়িয়ে রাত
আবার রাতের পরে ভোর
এলে না তুমি
আমার কাছে
আমি ছিলাম তোমার আপেক্ষায়
অনন্ত কাল ধরে
আসবে তুমি
আমার দুয়ারে
তবু এলে না তুমি


প্রথমবার তোমাকে দেখেই ভেবেছিলাম

প্রথমবার তোমাকে দেখেই ভেবেছিলাম -
তুমিই হয়ত সেই একজন,
যার জন্য ধূসর হয় এই পৃথিবীর প্রান্তর।।

প্রথমবার তোমাকে দেখেই ভেবেছিলাম -
তুমিই হয়ত সেই একজন,
যার জন্য আকাশ মেঘলা হয়।। 

প্রথমবার তোমাকে দেখেই ভেবেছিলাম -
তুমিই হয়ত সেই একজন,
যার জন্য পাখিরা গান গায়।।

প্রথমবার তোমাকে দেখেই ভেবেছিলাম -
তুমিই হয়ত সেই একজন,
যার জন্য গাছে গাছে ফুল ফোটে।।

ফেলে আসা দিন


ভাঙা ইটের টুকরো নিয়ে
বাড়ির উঠানে তোর সাথে,
এক্কাদোক্কা খেলেছি
দুপুরে রঙিন কাগজ কেটে
তোর পায়ের নূপুর বানিয়েছি
তোর এক পায়ে লাফানো
দেখতে বেশ লাগত
নূপুরের নিক্কন শোনা যেত

গরমের দুপুরে তুই আমি দুজনে
আম কাসুন্দি নিয়ে
ছুটে যেতাম আম বাগানে
এমন ভাব করতাম,
যেন কেউ না দেখে
দুপুর গরিয়ে বিকেল হয়ে যেত
তবুও আম কাসুন্দি শেষ হত না
*******************
এখনো দুপুর কাটে
স্তরের উপর স্তর
সময়ের পরে সময়
একদম নিয়ম মাফিক
তবুও খুঁজি সেই দিনগুলি,

নূপুরের নিক্কন আজও কানে বাজে
আজও দুপুরে একলা বসে
আম কাসুন্দি হাতে
ছুটে যাই আম বাগানে
গাছেরা হাওয়া দেয়
পাখিরা গান গায়
ক্লান্ত পথিক গাছের নীচে বসে
সবই চলে নিয়মমাফিক
শুধু তুই থাকিস না সাথে।।

বৃষ্টি...........


বৃষ্টি,
আমি আজ তোমার মত ঠান্ডা হতে চাই,
বৃষ্টি,
আমি যে তোমার মত শীতল হতে পারিনা‌,,
বৃষ্টি,
আমি যে তোমার মত কাঁদতে পারিনা
বৃষ্টি,
আমি যে তোমার মত ভেজাতে পারিনা।
বৃষ্টি,
তুমি কেমন ভাবে ঝরে পর, ভেবে পাইনা।
বৃষ্টি,
কেন তোমায় ভালবাসে সবাই, বলতে পার?
বৃষ্টি,
আমি যে ভালবাসি তোমায়, সেটা কি বুঝতে পার না?
বৃষ্টি,
আমায় ছেড়ে চলে যেও না।
বৃষ্টি,
তোমায় ছাড়া থাকতে পারব না। 

তুমি এলে না বলে বৃষ্টি নামেনি....


মেঘ জমে আছে আমার মনের কোনে
তুমি এলে না বলে
বৃষ্টি নামেনি,
আমার মনে।
আমি বসে ভাবি আনমনে,
মাঝ রাতে,
জোনাকির সাথে
তারারা জলে মাঝ রাতে।
স্মৃতি গুলো হাসে,
অচেনা লাগে মুখ গুলো
তুমি এলে না বলে,
বৃষ্টিও নামেনি।
বিষাদ হাসে আনমনে,
মেঘ জমে আছে আমার মনের কোনে
তুমি এলে না বলে,
বৃষ্টিও নামেনি।